ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো ২০২৪ সালে | Best Laptop For Freelancing 2024
আসসালামু আলাইকুম সবাইকে ডিপ আইটি বাড়ীর পক্ষ থেকে স্বাগতম আজকের এই আর্টিকেল আমরা জানতে পারবো ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ সবচেয়ে সেরা। সাথে এসব ল্যাপটপের দাম এবং কোথা থেকে কিনবেন তাও দেওয়া থাকবে চলুন শুরু করা যাক।উপরের সূচিপএ থেকে যেকোন টপিকে যেতে পারবেন।
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ এখানে জনসংখ্যা প্রতিদিনেই বৃদ্ধি পাচ্ছে সাথে বেকারত্বে হার ও সমানতালে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বর্তমানে একটি চাকরি পাওয়া যেন সোনার হরিণ যারা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি করে তাদের অবশ্য এরকম সমস্যায় পড়তে হয় না।কিন্তু যারা বেকারত্ব আছেন তাদের তো রোজগার করতে হবে সেজন্য ফ্রিল্যান্সিং একটি সফল পেশা এমনও অনেক আছে যারা সরকারি চাকরি ছেড়ে ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে মনোনিবেশ করেছেন।তাই আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং করতে চান তাহলে অবশ্যই একটি ভালো ল্যাপটপ দরকার ,তাই আমাদের আর্টিকেলে বলা হয়েছে ২০২৪ সালে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপটি ভালো হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কি ?
ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আপনারা অবশ্যই জানাবেন তা না হলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য একটি ভালো ল্যাপটপ খোঁজার জন্য গুগলে সার্চ করতেন না। যারা জানেন না তাদের জন্য, ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) মূলত এমন একটি পেশা যেখানে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এটি সাধারন চাকরির মতোই, কিন্তু ভিন্নতা হলো এখানে আপনি আপনার স্বাধীন মতো কাজ করতে পারবেন।
দেখা গেলো আপনার এখন কাজ করতে ইচ্ছা করছে না; আপনি করবেন না। যখন ইচ্ছা করবে তখন আবার চাইলেই করতে পারবেন। ধরাবাঁধা কোনো অফিস টাইম নেই। এরপরে এখানে আপনার নির্দিষ্ট কোনো ইমপ্লয়ার (Employer) নেই। যখন যে বায়ারের কাজ নিবেন তখন সে-ই আপনার ইমপ্লয়ার (Employer)।
সাধারন চাকরি থেকে এখানে আরেকটি বিষয়-এর ভিন্নতা আছে। সেটি হলো কাজের স্থান। ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এর নির্দিষ্ট কোনো অফিস নেই। মূলত আপনার বাড়িই হচ্ছে আপনার অফিস।
এখানে বসেই আপনি বিভিন্ন দেশের বায়ারদের সাথে কাজ করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) এর ক্ষেত্রে খুব সহজেই সরকারি বেসরকারি অনেক চাকরির থেকে বেশি বেতনে কাজ করতে পারবেন আপনার যদি যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষতা থাকে। এটা আমরা সবাই জানি যে, আমাদের দেশে দক্ষতার কদর হয় না সেভাবে; কিন্তু বাইরের দেশ গুলোতে হয়। আপনি সেসব দেশের বায়ারদের সাথে কাজ করে বাংলাদেশের তুলনায় দ্বিগুণ/তিনগুণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কোন ল্যাপটপ ভালো?
ফ্রিল্যান্সিং অনেক ক্যাটাগরি এবং স্কিল নিয়ে গঠিত প্রত্যেকটি স্কিল বা ক্যাটাগরির জন্য আলাদা আলাদা ধরনের ল্যাপটপ প্রয়োজন হয় যেমন ওয়েব ডেভেলপার,ডিজাইনার, ভিডিও এডিটর, প্রোগ্রামার ইত্যাদি কাজের জন্য আলাদা আলাদা মানের Ram এবং আলাদা আলাদা এসএসডির দরকার হয় তাই প্রত্যেকটি দক্ষতার উপর ভিত্তি করে আলাদা আলাদা ল্যাপটপগুলো দেওয়া হলোঃ
ওয়েব ডেভলপারদের জন্য সেরা ল্যাপটপ
ওয়েব ডেভলপার যেহেতু একটি উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন স্কেল তাই এর জন্য অনেক অনেক বেশি প্রসেসর এবং র্যাম এর ল্যাপটপ প্রয়োজন হয় ।ওয়েব ডেভেলপার এ যারা কাজ করে তাদের জন্য ৮ জিবি প্রেম এবং হাই কোয়ালিটি রেজুলেশন সম্পূর্ণ এসএসডি ল্যাপটপ দরকার।
→Lenovo IdeaPad Slim 3i 11th Gen Core i5
এই ল্যাপটপটি Lenovo এর IdeaPad সিরিজের এবং বিশেষভাবে একটি FHD ডিসপ্লে সহ একটি Vivid Color IPS ডিসপ্লে দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। DDR4 RAM সহ ইন্টেল প্রসেসর নিশ্চিত করে যে এটি এমনকি ব্যস্ত প্রোগ্রামিং সেশনের সাথেও তাল মিলিয়ে চলতে পারে।এই ল্যাপটপটির দাম বাংলাদেশে ৮০,০০০ টাকা।
→Acer Aspire A515-45 Ryzen
Acer-এর এই ল্যাপটপে 3200MHz DDR4 RAM-এর সাথে যুক্ত একটি 512 GB NVMe SSD রয়েছে৷ তাই এটি খুব সহজেই বড় আকারের কোড রেন্ডারিং পরিচালনা করতে পারে। 15.6" ফুল এইচডি (1920 x 1080) কমফিভিউ ডিসপ্লে নিশ্চিত করে যে কোনও বিবরণ মিস না হয়। জটিল কোডিং এবং বাস্তবায়নের জন্য ভাল।
এই ল্যাপটপটির দাম বাংলাদেশে ৬৩,৫০০ টাকা।
গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং ভিডিও এডিটরদের জন্য সেরা ল্যাপটপ
গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ভিডিও এডিটিং এর ক্ষেত্রে হাই-এন্ড ল্যাপটপ ব্যবহার করা আবশ্যক। ফ্রিল্যান্সাররা যারা গ্রাফিক্স বা ভিডিও সফ্টওয়্যার নিয়ে কাজ করেন তাদের Adobe Premiere, Final Cut Pro, বা পছন্দের অন্যান্য সফ্টওয়্যার চালানোর জন্য একটি ভাল প্রসেসর প্রয়োজন। গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের এমন ল্যাপটপ দরকার যা Adobe Photoshop, LightRoom, এবং PixL R এর মত গ্রাফিক্স প্রোগ্রাম পরিচালনা করতে পারে। গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং ভিডিও ভিডিও এডিটর উভয়ের ক্ষেত্রেই, ল্যাপটপে বড় ফাইল সংরক্ষণ করার জন্য একটি বড় SSD এবং কমপক্ষে 16 GB এর RAM থাকতে হবে। . ল্যাপটপের বিস্তারিত জানার জন্য উচ্চ রিফ্রেশ রেট সহ একটি পরিষ্কার এবং তীক্ষ্ণ স্ক্রিন প্রয়োজন।
→Microsoft Surface Laptop 4 Core i5 11th Gen 8GB RAM 512GB SSD
যদিও এটি একটি টাচ স্ক্রিন ল্যাপটপ; একাধিক রেন্ডারিং পরিচালনা করার সময়ও এই উইন্ডো চালিত মেশিনটি জ্বলজ্বল করে। শক্তিশালী কনফিগারেশন এটিকে ভারী সম্পদ-নিবিড় কাজগুলি পরিচালনা করতে দেয়। এই ল্যাপটপটি 2K ভিডিও রেন্ডারিং এবং পেশাদার মিডিয়া প্রক্রিয়াকরণের মতো ভারী সম্পদ-নিবিড় কাজগুলি পরিচালনা করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। এই প্রিমিয়াম ল্যাপটপটি যেকোন অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার গ্রাফিক্স ডিজাইনারের জন্য আবশ্যক।এই ল্যাপটপটির দাম বাংলাদেশে ১,৪০,০০০ টাকা।
→Apple MacBook Air 13.3-Inch Retina Display 8-core Apple M1 chip with 8GB RAM, 512GB SSD
যদিও অ্যাপল ল্যাপটপের দাম মোটা অঙ্কের তারা মূল্য ট্যাগের যোগ্য। ব্যাটারি থেকে রেটিনা স্ক্রীন ডিসপ্লে পর্যন্ত এই ল্যাপটপটি ভারী গ্রাফিক্স এবং রিসোর্স-ইনটেনসিভ কাজের জন্য একটি পরম যন্ত্র। তাই আপনি যদি একজন অভিজ্ঞ গ্রাফিক্স ডিজাইনার হন তাহলে এই ল্যাপটপটি যেকোনো রেন্ডারিং বা ডিজাইনের চাহিদা মেটাতে সর্বোত্তম। দ্রুত RAM এবং বড় SSD সহ উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন CPU নিশ্চিত করে যে এই ল্যাপটপ সম্ভাব্য সর্বনিম্ন সময়ে একটি বড় মাল্টিমিডিয়া ফাইল রেন্ডার করতে পারে। কনফিগারেশনটি কয়েক মিনিটের মধ্যে একটি হাই-ডেফিনিশন 4K ভিডিও রেন্ডার করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী। কারণ SoC M1 চিপসেট। এই ল্যাপটপটি হোঁচট না খেয়ে ফাইনাল কাট প্রো-এর মতো ভারী রিসোর্স-হগিং সফ্টওয়্যার চালাতে পারে।এই ল্যাপটপটির দাম বাংলাদেশে ১,৩৯,০০০ টাকা।
২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকার মধ্যে সেরা ল্যাপটপ
→HP Pavilion 14-n229tx TouchSmart Graphics Series 14" Laptop
যারা এইচপি ব্র্যান্ডের প্যাভিলিওন সিরিজ পছন্দ করেন তাদের জন্য এই ল্যাপটপ একটি আদর্শ পছন্দ। এই ল্যাপটিতে আছে ৪ জিবি র্যাম, ৭৫০ জিবি হার্ড ডিস্ক, ২ জিবি ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ড, ১৪-ইঞ্চি টাচস্ক্রীন ডিসপ্লে। এটির সাহায্যে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, প্রোগ্রামিং এবং সকল অফিশিয়াল কাজ করা যাবে খুব সহজেই। তাই যারা এই কাজ গুলো শিখতে চাইছেন তারা এটি কিনতে পারেন বিশ হাজার টাকার মধ্যেই।এই ল্যাপটপটির দাম বাংলাদেশে ১৯,০০০ টাকা।
→HP EliteBook 840 G1 Core i5 4th Gen 4GB RAM 500GB Ultrabook
বাংলাদেশে এইচপি এলিটবুক 840 G1 মডেলের সাথে ল্যাপটপ গ্রাহকেরা পরিচিত নয় এমন সংখ্যা শূণ্য বললে ভুল হবে না হয়তো। এই ল্যাপটপে ব্যবহার করা হয়েছে কোর আই৫ এর ৪র্থ জেনারেশন প্রসেসর, ৪ জিবি র্যাম, ৫০০ জিবি হার্ড ড্রাইভ, ১৪ ইঞ্চি এলইডি ব্যাকলিট ডিসপ্লে, ফুল এইচডি ওয়েবক্যাম। এই ল্যাপটপ দিয়ে সব লেভেলের কাজ করা যাবে খুব সহজেই। এই ল্যাপটপটির দামও পনের থেকে বিশ হাজার টাকার মধ্যে।
→Dell Latitude E7240 Core i5 4th Gen 128GB SSD Laptop
ডেল ব্র্যান্ডের মধ্যে ল্যাটিটিউড সিরিজ একটি জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী একটি সিরিজ। ডেলের ল্যাটিটিউড সিরিজের E7240 মডেলের ল্যাপটপে আছে ইন্টেল কোর আই৫ এর ৪র্থ জেনারেশন প্রসেসর, ৪ জিব র্যাম, ১২৮ জিব এসএসডি এবং ১২.৫ ইঞ্চির ফুল এইচডি ডিসপ্লে। খুব স্লিম এই ল্যাপটপ দিয়ে সকল ধরনের কাজ করা করা যাবে কোনো বাধা ছাড়াই। এটি দিয়ে শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাস, চাকুরিজিবিরা অনলাইন মিটিং করতে পারবেন খুব পরিষ্কার ভাবে কারণ এতে ব্যবহার করা হয়েছে এইচডি রেজুলেশনের ওয়েবক্যাম। যাদের বাজেট ১৫ হাজার টাকার বেশি তারা এই মডেলটি নিতে পারেন।
পরিশেষে
আশা করি এতক্ষণের মধ্যে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য আপনার পছন্দের ল্যাপটপটি পেয়ে গেছেন।বর্তমান সময়ে ডলারের দাম এর পরিবর্তন হওয়ার কারণে কোনো কিছুর দামই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তাই আপনার যে কোন ল্যাপটপ পছন্দ হলে সেটা আপনি উক্ত শোরুমে গিয়ে সেটার দাম জানতে পারবেন। অথবা উক্ত ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ল্যাপটপের দাম জানতে পারবেন। যেহেতু দাম উঠানামা করছে তাই এখানে নির্দিষ্ট দাম উল্লেখ করে দেওয়া হয়নি।
বর্তমানে সরকারি চাকরির একটি ভালো বিকল্প হলো ফ্রিল্যান্সিং করা। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য আমাদের অবশ্যই ল্যাপটপের প্রয়োজন হয়। আপনারা যাতে ভালো একটি ল্যাপটপ কিনতে পারেন তার জন্যই আপনাদের সাথে আমাদের এই আর্টিকেল টি শেয়ার করা। এই আর্টিকেলটি আপনার ফ্রিল্যান্সিং করতে অনেক সাহায্য করবে। যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার কাছে ভালো লাগে তাহলে আপনি চাইলে এই আর্টিকেলটি আপনার ফ্রেন্ড কিংবা আপনার ফেসবুকের প্রোফাইলে শেয়ার করতে পারেন। যাতে অন্যান্য মানুষেরা ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য সেরা কিছু ল্যাপটপ সম্পর্কে জানতে পারে। এছাড়াও এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট আপনি চাইলে ফলো করতে পারেন।








ডিপ আইটি বাড়ীর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url